অ্যাপ ইনস্টলঃ https://play.google.com/store/apps/details?id=com.gearuplab.amratosrefbondhukebol
আমরা তো স্রেফ বন্ধু কেবল
বই : বেলা ফুরাবার আগে
লেখক : আরিফ আজাদ
প্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন
আমরা তো স্রেফ বন্ধু কেবল আরিফ আজাদ এর বেলা ফুরাবার আগে বই থেকে নেয়া হয়েছে। বেলা ফুরাবার আগে আরিফ আজাদ বই। আরিফ আজাদের বই বেলা ফুরাবার আগে থেকে আমরা তো স্রেফ বন্ধু কেবল।
Amra to Sref Bondhu Kebol arif azad book offline. bela furabar age book arif azad.
যুবকদের দ্বীনে ফেরার পথে সবচেয়ে বড় যে প্রতিবন্ধকতা, সেটা হলাে হারাম রিলেশানশিপ। এমন অনেকেই আছে যারা হয়তাে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়ে, রামাদানে সিয়াম রাখে, দ্বীনের ব্যাপারেও খুব আগ্রহী। কিন্তু, একটা জায়গায় এসে আটকে গেছে—হারাম রিলেশনশিপ। তাদের ধারণা, নন-মাহরাম[1] একটি মেয়ের সাথে চলাফেরা করা, একসাথে ঘুরতে যাওয়া, ফুচকা খাওয়া, সেলফি তােলা, সেই সেলফিগুলাে ফেইসবুকে আপলােড দেওয়া এবং হাত ধরাধরি করে পার্কে হেঁটে বেড়ানােতে আসলে কোনাে সমস্যা নেই।
হারাম রিলেশানশিপের সূচনাটা মােটাদাগে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে শুরু হয়ে থাকে। একটা ছেলে বা মেয়ে যখন নতুন নতুন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তখন তার মনে যৌবনের উত্তাল হাওয়া বইতে থাকে। সে আশা করে কলেজের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রটা তার বন্ধু হােক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে স্মার্ট ছেলেটা তার সাথে একই রিকশায় ঘুরে বেড়ানােতে সে অন্য রকম একটা আনন্দ পেয়ে থাকে। ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে সুন্দরী বান্ধবীটা ক্যান্টিনে তার সাথে বসে ফুচকা খাচ্ছে—ব্যাপারটাই তার কাছে অন্য রকম! কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন আমাদের জীবনে এ রকম অনেকগুলাে বন্ধু-বান্ধবী এসে ভিড় করে, যাদের আমরা মিষ্টি ভাষায় ‘জাস্ট ফ্রেন্ড’ বলে থাকি।
কোনাে একটা ছেলে যখন নন-মাহরাম কোনাে মেয়েকে নিয়ে ক্যান্টিনে বসে আড্ডা দেয় কিংবা একটা মেয়ে যখন ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র কোনাে এক নন-মাহরাম বড় ভাইয়ের সাথে একই রিকশায় করে ঘুরে বেড়ায়—এই ঘটনাগুলােকে আমরা নেহাতই ‘বন্ধুত্ব বলে চালিয়ে দিই। কিন্তু এই তথাকথিত বন্ধুত্ব’ ‘জাস্ট ফ্রেন্ড’-এর নেপথ্যের ঘটনা আমরা তেমন জানতে পারি না।
এ রকম ‘জাস্ট ফ্রেন্ড রিলেশানশিপে আক্রান্ত কোনাে ভাই কিংবা বােনকে যখনই আপনি বলতে যাবেন যে, তারা যা করছে বা যেভাবে চলছে তা আদৌ ইসলাম সমর্থন করে না, তখনই তারা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠবে। আর বলবে, আরে ভাই! আমরা প্রেম করছি নাকি? আমরা তাে কেবল বন্ধু। আপনি আর আমি যেমন বন্ধু, এই মেয়েটা আর আমার মধ্যেও সে রকম বন্ধুত্ব। এর বাইরে আর কিছু না।
তাদের প্রতি হৃদয়ের গভীর থেকে ভালােবাসা এবং শ্রদ্ধা রেখেই বলতে হয়—তারা যে বন্ধুত্বের কথা বলছেন, সেই বন্ধুত্ব করতে ইসলাম কখনােই অনুমতি দেয় না। তারা যদি ইসলামকে অন্য পাঁচ-দশটা ধর্মের মতাে কেবল আনুষ্ঠানিক ইবাদত- কেন্দ্রিক ধর্ম মনে করে থাকে, তাহলে তারা খুব বড় ভুলের মধ্যে আছে। ইসলাম ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে ঘুমুতে যাওয়া পর্যন্ত আমাদের জীবনের সকল দিক নিয়েই কথা বলে। আদতে ইসলাম কোনাে ধর্ম নয়। এটা হলাে দ্বীন। একটা পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। এই ইসলাম নির্ধারণ করে দেয়—আমি কার সাথে মিশব, কার সাথে মিশব না। কী খাব আর কী খাব না। কী পরব আর কী পরব না। কীভাবে চলব আর কীভাবে চলব না। পরীক্ষায় পাশ করার জন্য কিংবা ভালাে রেজাল্ট করার জন্য আমরা যেমন ক্লাসের সিলেবাস ফলাে করি, ঠিক সেভাবে কুরআন ও হাদিস হলাে আমাদের জীবনের সিলেবাস। এই সিলেবাস অনুসরণ করা ব্যতীত আখিরাতে ভালাে রেজাল্ট করা আমাদের পক্ষে কখনােই সম্ভব নয়।
কেবল ‘জাস্ট ফ্রেন্ড’ বলে যার সাথে আমি মিশছি, ঘুরছি, একসাথে খাচ্ছি, তার সাথে মেশার, ঘােরার কিংবা খাওয়ার অনুমতি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাকে দেননি। আমার জন্য তিনি কুরআনুল কারীমে স্পষ্ট করেই বলেছেন—
قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ
(হে রাসুল) আপনি মুমিন ব্যক্তিদের বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হিফাযত করে।[1]
আয়াতটির দিকে আরেকবার খেয়াল করা যাক। এখানে মুমিন ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য করেই বলা হচ্ছে। মুমিন ব্যক্তি কারা? যারা আল্লাহতে বিশ্বাস করে। রাসুল, পরকাল, জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশতা ইত্যাদিতে বিশ্বাস করে তারাই হলাে মুমিন। একবার চিন্তা করি, আমি কি আল্লাহতে বিশ্বাস করি? নবি-রাসুলে বিশ্বাস করি? পরকাল, জান্নাত-জাহান্নাম-ফেরেশতায় বিশ্বাস করি? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে এই আয়াতটি আমার জন্য। হ্যাঁ, আমাকে উদ্দেশ্য করেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা দৃষ্টি সংযত এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করে চলতে বলেছেন।
‘দৃষ্টি সংযত বলতে আসলে কী বােঝায়? তাহলে কি আমরা চোখ বন্ধ করে হাটব? না, ব্যাপারটা আসলে তা নয়। নবিজির হাদিস থেকে জানা যায়, তিনি বলেছেন, 'যখনই কোনাে পরনারীর দিকে চোখ পড়ে যাবে, সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিতে হবে। দ্বিতীয়বার চোখ তুলে তার দিকে তাকানাে যাবে না।[২]
অ্যাপ: আমরা তো স্রেফ বন্ধু কেবল